শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
চাঁদার দাবিতে ২ শতাধিক বাড়িতে লিখে দিল ‘আমরা ছেলেগুলা ভালো না’

চাঁদার দাবিতে ২ শতাধিক বাড়িতে লিখে দিল ‘আমরা ছেলেগুলা ভালো না’

চাঁদার দাবিতে ২ শতাধিক বাড়িতে লিখে দিল ‘আমরা ছেলেগুলা ভালো না’
চাঁদার দাবিতে ২ শতাধিক বাড়িতে লিখে দিল ‘আমরা ছেলেগুলা ভালো না’

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের চারটি পাড়ার দুই শতাধিক বাড়িতে রাতের আঁধারে চাঁদা দাবি করে পোস্টারিং হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবরের মধ্যে গ্রামের একটি পুকুরপাড়ে লাইটপোস্টের সাথে লাগানো বাক্সে চাঁদার টাকা দিতে বলা হয়েছে। টাকা না দিলে ৭ অক্টোবর থেকে গ্রামের ছেলে-মেয়ে হারিয়ে গেলে কারো কিছু করার থাকবে না বলে পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ রবিবার সকালে ওই চার পাড়ার লোকজন পোস্টারিং দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

তবে পুলিশ বলছে, আতঙ্কের কিছু নেই। মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে পোস্টারিং হয়েছে বলে ধারণা করছে তারা। আর গ্রামের লোকজন বলছে, বিষ্ণুপুর গ্রামে মাদকের ব্যবসা কিংবা সেবনকারী তেমন নেই। আতঙ্কিত হয়ে গ্রামের অনেকেই তাদের সন্তানদের আজ স্কুলে পাঠাননি।

আবার পুরুষদের মধ্যে অনেকেই কাজেও যাননি।
বিষ্ণুপুর গ্রামের দপ্তরিপাড়া, মাজাগাড়ি পাড়া, মোন্নাপাড়া ও মিস্ত্রিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বাড়ির দরজায় কম্পিউটারে কম্পোজ করা ছোট আকারের পোস্টার আঠা দিয়ে লাগানো হয়েছে। পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে―‘৬ তারিখের মধ্যে টাকা দিতে হবে। না হইলে ৭ তারিখ থেকে আপনাদের ছেলে-মেয়ে হারায় গেলে আমার কোনো কিছু করার থাকবে না।

আমি বা আমরা কে সেটা না খুঁজে, আমি যা বলছি সেটা করার চেষ্টা করেন, তাহলে কিচ্ছু হবে না। অল্প কিছু টাকার জন্য বাচ্চাদের বিপদে ফেলবেন না। যদি ছেলে-মেয়েদের মঙ্গল চান তাহলে লোয়া পুকুর সোলার লাইটের সাথে যে বাক্স থাকবে, নিজের টাকার সাথে একটা কাগজে নিজের নাম লিখে ওই বাক্সে ফেলান আর নিজের বাচ্চাকে সুরক্ষিত করুন, ধন্যবাদ।’
বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে পোস্টারে আরো লেখা রয়েছে―‘আমার এই কাগজ আপনি পড়ছেন, তাহলে মনে করেন আপনার ছেলে-মেয়েকে তুলে আনতেও পারবো। দয়া করে টাকাটা দিয়েন, আমরা ছেলেগুলা ভালো না।

ভালো থাকবেন, ৬ তারিখ পর্যন্ত। আল্লাহ হাফিজ।’
ওই গ্রামের নাসিমা আক্তার, মালেকা বেগম, সাজেদা বেগম, পারভিন খাতুন, আলেয়া বেগমসহ অন্যরা জানান, ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করে প্রতিটি বাড়িতে পোস্টার লাগানো হয়েছে।

তারা জানান, ওই গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কর্মজীবী। কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ কাঠমিস্ত্রি আবার কেউ ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন। মোটামুটি সব পরিবারই সচ্ছল। তবে ধনী পরিবারের বসবাস নেই ওই চার পাড়ায়। সকালে প্রতিটি বাড়ির দরজায় এ ধরনের পোস্টারিং দেখে অনেকেই আতঙ্কে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাননি।

বিষ্ণুপুর মাজাগাড়ি পাড়ার কাঠমিস্ত্রি নয়ন প্রামাণিক বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার বাড়ির ইটের দেয়ালে পোস্টার লাগানো। পরে জানতে পারি চার পাড়ার দুই শতাধিক বাড়িতে একই ধরনের পোস্টার লাগানো হয়েছে। পোস্টার পড়ে সবার মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে আমার দুই সন্তানকে আজ স্কুলেই পাঠাইনি। আমি নিজেও কোনো কাজে যাইনি।’

মুরইল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা দুষ্টচক্রের কাজ। গ্রামের কিছু মাদকাসক্ত ছেলে এ ধরনের পোস্টারিং করতে পারে।’

মুরইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমাদের ধারণা, গ্রামের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যারা মাদকের সাথে জড়িত তারাই গ্রামে আতঙ্ক ছড়াতে এ ধরনের পোস্টারিং করেছে। গ্রামের মানুষের মধ্যে চাঁদা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় রবিবার রাত থেকে গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) দিয়ে পুরো গ্রাম পাহারা দেওয়া হবে।’

কাহালু থানার ওসি মাহমুদ হাসান বলেন, ‘এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটা মাদকাসক্ত যুবকদের কাজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ ইতিমধ্যে জড়িতদের শনাক্ত করতে অনুসন্ধান শুরু করেছে। রাতে ওই গ্রামে পুলিশি টহল বাড়ানো হবে।’

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply